
নড়াইলের আগামী ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে মাঠে নির্বাচনী কার্যক্রম শুরু করেছে নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলের সম্ভাব্য প্রার্থীরা
জাগোনড়াইল ডেক্স :
কালিয়া উপজেলা ও নড়াইল সদরের পাঁচটি ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত নড়াইল ১ আসনে পুরুষ-মহিলা ও তৃতীয় লিঙ্গ মিলে মোট ২ লক্ষ ৯০ হাজার ৯৪৫ জন ভোটারের বিপরীতে মনোনয়ন লড়াইয়ে এনসিপি ও ইসলাম পন্থী দলগুলো একক প্রার্থী দিলেও বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশী ১২ জন।
গত বছরের ৫ আগস্ট আওয়ামী সরকারের পতনের পর গঠিত অন্তবর্তীকালীন সরকার আগামী ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি সময়েই হতে পারে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন, এমনটাই বারবার গণমাধ্যমে ঘোষণা দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম।
বিগত নির্বাচনগুলোতে এই আসনটিতে আওয়ামীলীগের আধিপত্য থাকলেও ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর থেকে মাঠে নেই তারা।
তবে ভোটের মাঠে বাংলাদেশ জামায়তে ইসলামী, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, জাতীয় নাগরিক পার্টি এবং খেলাফতে মজলিসের একক ভাবে প্রার্থী থাকায় কোন দলীয় কোন্দল নেই। এ দলগুলো সাধারণ ভোট নিজেদের পক্ষে নিতে সভা সমাবেশ, উঠান বৈঠক, কর্মী সভা, মোটর শোভাযাত্রাসহ নানামুখী কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছে।
এদিকে দেশের বৃহত্তম রাজনৈতিক সংগঠন বিএনপিতে মনোনয়ন প্রত্যাশী ১২ জন। জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও নড়াইল জেলা বিএনপির সভাপতি আলহাজ্ব বিশ্বাস জাহাঙ্গীর আলম, জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও সাবেক যুক্তরাষ্ট্র বিএনপি’র সভাপতি আব্দুল লতিফ সম্রাট, জেলা বিএনপির সাবেক উপদেষ্টা আশিক ফারুক, জেলা বিএনপির সহ সভাপতি জুলফিকার আলী মন্ডল, সাবেক জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি সাজ্জাদুর রহমান সুজা, কালিয়া উপজেলা বিএনপির সভাপতি সরদার আনোয়ার হোসেন, যুক্তরাজ্যের অঙ্গরাজ্য টেক্সাস বিএনপি’র সাধারণ সম্পাদক জহিরুল ইসলাম জহির, হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য কল্যাণফ্রন্টের খুলনা বিভাগের সাংগঠনিক সম্পাদক সুকেশ সাহা আনন্দ, বিএনপি নেতা লেফটেন্ট কর্নেল (অবঃ) এসএম সাজ্জাদ হোসেন, শফিকুল হায়দার পারভেজ, সাবেক ছাত্রনেতা রবিউল ইসলাম সাগর, জেলা জিয়া পরিষদের ১ নং সদস্য বি এম নাকিব হোসেন, কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক দলের আপ্যায়ন বিষয়ক সহ সম্পাদক শাহিদুজ্জামান পাশা।
বর্তমানে এ আসনে বিএনপিতে চরম আকারে গ্রুপিং থাকলেও কেন্দ্র যাকে নমিনেশন দিবে সকলে তার পক্ষে কাজ করবেন বলে বিভিন্ন সমাবেশে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন নেতাকর্মীরা। তাই নিজের গ্রহনযোগ্যতা জাহির এবং দলের পক্ষে ভোট আনতে সভা সমাবেশ, উঠান বৈঠক, কর্মী সভা ও ৩১ দফার লিফলেট বিতরণ সহ নানামুখী কর্মকাণ্ডে লিপ্ত থেকে ভোটারদের দৃষ্টি আকর্ষণ করছেন মনোনয়ন প্রত্যাশীরা।
তবে দলের দুর্দিনে যে সব নেতারা দলের তৃণমুলের কর্মীদের পাশে দাঁড়িয়ে মামলা হামলায় খোঁজ খবর নিয়েছেন এবং সহযোগিতা করেছেন এমন কাউকে নমিনেশন দেওয়ার দাবী তৃনমূলের।
আবার অনেকে দলের দুর্দিনে আন্তর্জাতিক ভাবে দলকে সুসংগঠিত রাখতে বাহিরে থেকে দল ও নেতাকর্মীদের পাশে থেকেছেন। তাদের অবদানও অনস্বীকার্য বলে মনে করেন অনেকে।
দেশের বৃহত্তম রাজনৈতিক সংগঠন বিএনপি। এত বড় একটি দলে ভুল বোঝাবুঝি থাকতেই পারে। তবে দল যাকে মনোনয়ন দিবে, সকল ভুল বোঝাবুঝির অবসান ঘটিয়ে সকলে মিলে ধানের শীষের পক্ষে কাজ করতে হবে, এমনটি আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন মনোনয়ন প্রত্যাশীরা। তাই বিএনপিতে কে পাচ্ছেন মনোনয়ন? এ চমকের প্রতিক্ষায় নড়াইল-১ এর আপামর জনগণ।
অপরদিকে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলাম সারাদেশে আগে ভাগেই প্রায় প্রতিটি আসনে একক প্রার্থী নিশ্চিত করেছেন। এই আসনে জেলা সেক্রেটারি মাওলানা ওবায়দুল্লাহ কায়সারকে চুড়ান্তকরেছে জামায়াতে ইসলামী। তিনি দলীয় নেতা কর্মীদের নিয়ে সভা সমাবেশ উঠান বৈঠক সহ দলীয় কার্যক্রম চালাচ্ছেন এবং এই আসন থেকে নির্বাচিত হলে দৃশ্যমান উন্নয়নের আশ্বাস দিয়ে চলেছেন রাতদিন।
এছাড়া ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ ও খেলাফত মজলিস ও তাদের প্রার্থী চূড়ান্ত করেছে। ইসলামি আন্দোলন তাদের হাত পাখা প্রতিকের কান্ডারী হিসেবে মাওলানা আব্দুল আজিজ ও খেলাফত মজলিসে মাওলানা আব্দুর রহমানকে চুড়ান্ত করেছেন। তারাও মিছিল মিটিং ও মটর শোভাযাত্রা করে দলের কার্যক্রম জানান দিচ্ছেন এবং ইসলামি শাষন কায়েম করে দেশ ও জনগণের কল্যানে কাজ করার প্রতিশ্রুতি দিয়ে চলেছেন।
এদিকে জাতীয় নাগরিক পার্টির দলীয় মনোনয়ন চূড়ান্ত না হলেও দলটির পক্ষে এগিয়ে রয়েছেন উপজেলা জাতীয় নাগরিক পার্টির মুখ্য সমন্বয়ক নাজমুল হাসান উজ্জ্বল। এই নেতা জানান, দলীয় হাইকমান্ডের নির্দেশে আমি আগামী নির্বাচনের প্রস্তুতি নিতে সকল কার্যক্রম চূড়ান্ত করে ফেলেছি এবং দল আমাকে মনোনয়নের ব্যাপারে শতভাগ নিশ্চয়তা দিয়েছে। আমরা যদি ক্ষমতায় আসতে পারি তাহলে এই বাংলাদেশ হবে অসাম্প্রদায়িক চেতনার বাংলাদেশ।